কল্পবোধ
।। জলের আসমান ।।
বি কা শ চ ন্দ
কালের গর্ভ লুকিয়ে আছে জলের গভীরে
জলের ভেতর জলের জন্ম শরীর চিরন্তন
অন্তিম সময়ও দিন গোনে জলের শয্যায়
#
কালো মেঘে কালি মাখে নদী
যন্ত্রদানব খুবলে দেখেছে গর্ভ যোনি কুণ্ড
আঁজলা ভরে যে জল তুলি চুম্বনে
সে জলেতেই আদুল নাচ তুমুল মৃত্যু কুণ্ডলী
স্বভাব দোষের ধ্বংস লীলা দেখে
দিন দিন বেড়ে ওঠে জীবনের বিলাপ
অনিশ্চিত সময়ে অপেক্ষা শুধু ঘোলা জলে হাহাকার
নির্ভার প্রত্যাশায় জলতরঙ্গে জীবনের বন্দনা
#
ওপাড় জুড়ে তবু অলৌকিক অভিমান
বৃষ্টি চাইতেই হবে প্রাণ জুড়ে নিতে হবে জল
তবুও জলের নদীর কাছে
বাঁধা আছে জীবনের যত অভিমান
আমরাই পরম্পরা সন্তান সন্ততি
জল জমিনে ঘাই তোলে আকাল সংকেত
দু’পাড়ে পাড়ায় মন্দির মসজিদ পূজা পাঠ আজান
কেলেঘাইর দিলদরিয়ায় জলের আসমান
।। কেলেঘাই ।।
ম নো তো ষ আ চা র্য
পুরোনো ভিটের কাছে মাঝরাতে হু-হু জ্বলে স্মৃতি
পাতায় মুড়েছি শুধু নষ্ট এক জীবনের কথা
সন্ধ্যাতারা নেমেছিল, পাদপীঠ বিরহখচিত
জোনাকি মুদ্রিত ভাষা পাঠ সেরে আঁধারের অগ্রন্থিত পুথি
ব্যাকুল কান্নার ধ্বনি উবে যায় শব্দব্রহ্মলোকে…
পুরোনো শস্যের বীজে অঙ্কুরিত সম্পর্কের নম্র আখর
রেণু ছড়িয়ে জেগে আছে অভয়মুদ্রায়
আকাঙ্ক্ষার জ্যোৎস্না মেখে ফিরে আসি, কেলেঘাই ডাকে
জলজ ভাষায় —
ক্ষতচিহ্ন সারানোর গীতিময় থানে।
।। ধ্রুবক ।।
প লি দে
জনপদ বলল
তুমি ক্লান্ত হও না?
ইচ্ছে করে না
একটু বিশ্রাম নিতে?
কেলেঘাই বলল
আমি বাহক।
তুমি স্থির কেন?
তোমার ইচ্ছে করে না
পৃথিবীকে দেখতে?
জনপদ বলল
আমি ধারক।
জীবন বলল
আমি উভয়কেই চাই।
ধারক এবং বাহক।
বাঁশীওয়ালা বললেন
সব আপেক্ষিক।
আমি ছাড়া..
।। বর্ণ ।।
বা সু দে ব গা য়ে ন
তোমার হাত ধরে দেখেছি
বড় গাছ, লাল ফুল, সোজা পথ
তবু আপন করে ভাবিনি তোমাকে।
সুষম ফ্রেমের ভাঁজে
তোমাকে আত্মীকরণ করি
যাতে হলো এ লেখা, এ ভাষা।
তোমাকে উচ্চারণে-
রাতের কুয়াশা শিশির হয়,
পাখি ডাকে,ফুল ফোটে, কবির কলম হৃদয় জুড়ায়,
অবোধ শিশু ঘুমায় শস্য বোঁটা মুখে।
ঘরের উঠোনে গান গায় উই পোকা,
বারান্দায় রোদ ঝরে;
বিকেলে বুড়িমা তানপুরায় সুর তোলেন,
একুশে উচ্চারণে
সন্ধ্যা ঘনায় কেলেঘাই চরে।
।। কেলেঘাই ।।
স ন্দী প ন বে রা
আমাদের ছোট নদী কতো কথা বলে
অতীতের গল্পেরা আজও ভিড় করে।
বয়ে যায় অভিমান
ধীর গতি পথে,
কখনও বর্ষা এলে
বিভাজিত জলধারা তার
উচ্ছ্বাসে সে ঢেউ তুলে।
এক সুতোয় বেঁধে রাখে
তিন জেলার খেটে খাওয়াদের,
স্নান করায় শিশির ও জোৎস্নায়।
খড় টালি টিন
তাল খেজুরের বন,
যাদের চোখের জলে ভাসে
সেই কৃষকের হাসিতেই বালি
মিশিয়েছে চেনা রঙ,
রঙের দ্বন্দ্বে বাঁধ ভাঙে ভরা বর্ষায়
ডুবে যায় সব দেওয়াল, চাপা পড়ে আশা।
তবু তার এক আঁজলা জলে
তিন জেলাকেই পাই
আমাদের রক্ত প্রবাহে
মিশে আছে কেলেঘাই।
অনুগল্প
।। পারাপার ।।
শু ভ জি ৎ জা না
গোধূলির পর এ তল্লাটে তেমন মানুষের আনাগোনা নেই। পরান মাঝি তাই নৌকাটা হিজল গাছের শিকড়ে বেঁধে একটা বিড়ি ধরায়। ফাল্গুনের মিষ্টি দক্ষিণা বাতাস বিড়ির ধোঁয়াকে কেলেঘাইর ঘোলাটে জলের উপর দিয়ে মোহানার দিকে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। নিভু নিভু পশ্চিমী আলোর ছটায় ধোঁয়াগুলি নানান রঙের হয়ে পরানের থেকে দূরে দূরে হারিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারে। যেমন হারিয়ে গেছে তার জীবনের বিয়াল্লিশ বছর। এই হিজলের ঘাটেই কেটেছে আটাশ বছর। দিন রাত এপারের লোক ওপারে, ওপারের লোক এপারে পারাপার করতেই তার আনন্দ। পারাপার করে যেটুকু অর্থ সে পায়, তা দিয়ে দিব্যি চলে তার একার সংসার। পশ্চিম আকাশ থেকে ফাল্গুনী জোছনার দিকে তাকিয়ে থাকে পরান। এমনই এক সন্ধ্যায় কেলেঘাইর রুপালী জল ভীষণ আকৃষ্ট করেছিল তার ছোট্ট ফুটফুটে মেয়েটাকে। তারও ছিল চাঁদের মতন মুখখানি। মনে হয় তাই কেলেঘাই ভুল করে চাঁদ ভেবে মেয়েটাকে কোলে নিয়েছে, আর ফেরত পাঠায় নি। তাই দুঃখ পরানের আছে তবে রাগ নেই কেলেঘাইর উপর। সারাদিন পরান তাই এই হিজল গাছের কাছে বসে কেলেঘাইর স্রোতে তার মেয়েকে খুঁজে বেড়ায়। আজ সেই দিন, যে দিন ফুটফুটে মেয়েটাকে কেলেঘাই কোলে নিয়ে ছিল। তাই পরানের আজ বাড়ি যেতে ভালো লাগছেনা। পোড়া বিঁড়িটা ফেলে সে পুনরায় আবার একটা বিঁড়িতে আগুন দেয়। রাত গভীর হতে থাকে। দূরে গ্রাম গুলিতে সবেমাত্র আলো গুলো নিভতে শুরু করেছে, ঠিক সেই সময়-
-পরান জ্যাঠা আমি সঙ্গমী।
হাতের বিঁড়িটা পরান ফেলে দিয়ে
-এত রাতে। কোন বিপদ ঘটলো নাকিরে মা ?
-তুমি-তো জানোই, অনেক দিন ধরে আমার পরিবার আমার বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু কেউ
আমার মনের কথা জানতে চাইছে না। আমি নেধুয়ার বিপিনকে ভালোবাসি। ওকেই বিয়ে করবো। এ শরীর, এ মনের অধিকার কেবল বিপিনেরই। আমি অন্য কোন পুরুষের কাছে তা সমর্পণ করতে পারবো না। ঐ দেখ ওপারে বিপিন আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
নদীর ওপার থেকে একটা মিট্মিটে আলো দেখতে পায় পরান।
-জ্যাঠা, যদি তুমি আমায় আজ ওপারে না পৌঁছে দাও তবে এই কেলেঘাইর স্রোতে আমি
হারিয়ে যাবো। এখন কেলেঘাই আমার জীবনে সবথেকে বড় বাধা।
কথাটা শোনা মাত্রই পরানের সারা গা দিয়ে একটা চেনা কম্পন মাটি ছুঁয়ে গেল। সে আর দেরি করলো না কোন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। নৌকার দড়িটা হিজলের শেকড় থেকে খুলে, দাঁড়টা শক্ত করে ধরে-
-আয় মা। ওরা চলে আসার আগে তোকে বিপিনের কাছে পৌঁছাতে হবে। যা মা তোর মনের বাসনা পূরন কর।
সঙ্গমীকে বিপিনের কাছে পৌঁছে দিয়ে, পরান অন্ধকারে কেলেঘাইতে নৌকা ভাসিয়ে দেয় আর মনে মনে ভাবে আমার মেয়েটাও আজ বিবাহযোগ্যা হয়ে উঠতো।
অনুপ্রবন্ধ
।। বাংলার প্রাচীন লোহরা সেতু ছিল মেদিনীপুরে ।।
বি শ্ব সি ন্ধু দে
বাংলার একটি প্রাচীনতম নিদর্শন হারিয়ে গিয়েছে। হারিয়েছে সভ্যতার অগ্রগতির স্বাভাবিক নিয়মে। সেই নিদর্শন ছিল বাংলার প্রাচীনতম সেতুর। তথ্য থেকে জানা যায়, বাংলার প্রাচীন সেতুর গৌরবের অধিকারী ছিল মেদিনীপুর। এখনকার ভৌগোলিক সীমা অনুযায়ী বললে পশ্চিম মেদিনীপুর।
সেতুটির অবস্থান ছিল নারায়ণগড় ব্লকের পোক্তাপোলে। ওড়িশা ট্রাঙ্ক রোডে কেলেঘাই নদের উপরে। সেতুর গায়ে একটি মূর্তি খোদাই করা ছিল। স্থানীয় ভাবে যার নাম ছিল ‘মল্লিকা’। ওই এলাকায় দু’টি সেতু ছিল। একটি সেতু প্রাচীন হিন্দু স্থাপত্য রীতিতে নির্মিত। ঝামাপাথর দিয়ে লহড়া ধাপ পদ্ধতিতে তৈরি। অন্য সেতুটি ছিল গাঁথনি দেওয়া খিলানের। ‘মেদিনীপুর: সংস্কৃতি ও মানবসমাজ’ বইয়ে লহড়া পদ্ধতিতে নির্মিত সেতুটিকে বাংলার প্রাচীনতম সেতু বলে উল্লেখ করেছেন প্রত্নতাত্ত্বিক তারাপদ সাঁতরা। এই অঞ্চলের ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্বের সন্ধানে তিনি পায়ে হেঁটে ঘুরেছিলেন বহু জায়গা।
সেতুটির প্রাচীনত্ব নিয়ে খোঁজ শুরু হয় গত শতকের আশির দশকে। তার কারণও ছিল। সেই সময়ে ‘ইন্ডিয়ান রোড কংগ্রেস’এর ৩৮তম অধিবেশন উপলক্ষে পূর্ত দফতর থেকে একটি বই প্রকাশিত হয়। যার নাম ‘হাইওয়ে ব্রিজস ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল’। বইয়ের ভূমিকায় দাবি করা হয়েছিল, সতেরো শতক থেকে সেতু নির্মাণ শুরু হয়। ইমারতি বাস্তুবিদ্যায় সীমিত জ্ঞানের কারণেই দক্ষিণবঙ্গে সহজলভ্য ইট-পাথর দিয়ে খিলান সেতু নির্মাণ শুরু হয়। ভূমিকায় এমন সেতুর উদাহরণ হিসেবে ওড়িশা ট্রাঙ্ক রোডের উপরে পোক্তাপোলের দ্বিতীয় সেতুটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ওড়িশা ট্রাঙ্ক রোড তৈরি হয়েছে ১৮২৬ সালে। তাহলে সেই রাস্তার উপরে তৈরি সেতু কী করে প্রাচীন হয়? তারাপদ সাঁতরার মত, ওড়িশার গঙ্গ বংশীয় রাজারা দ্বাদশ-ত্রয়োদশ শতকে মেদিনীপুরের কিছু অংশে রাজত্ব বিস্তার করেছিলেন। পোক্তাপোলের ধাপ পদ্ধতিতে তৈরি সেতু ওড়িশার রাজাদের আমলেই তৈরি হয়েছিল। ওড়িশার যাজপুরে এগারো নালার সেতু এবং পুরীর কাছে মধুপুর নদীর উপরে আঠারো নালার সেতুর নির্মাণ পদ্ধতিও পোক্তাপোলের মতো। এই দু’টি সেতু আরও প্রাচীন।
বাংলার প্রাচীন সেই সেতু আর নেই। এখন খড়্গপুর-বালেশ্বর ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের তৈরি লম্বা কংক্রিটের সেতু। তবে সেই ‘মল্লিকা’ মূর্তি অক্ষত আছে। নতুন সেতুর কংক্রিটের থামের দেওয়ালে আটকে দিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। পাশে রয়েছে আরেকটি মূর্তি। তার কোনও ইতিহাস মিলছে না। মল্লিকা নিয়ে কিংবদন্তী রয়েছে। প্রতিবছর পয়লা বৈশাখ এলাকায় মেলা হয়। বৈশাখী মেলা। পুজো পান মল্লিকা। দূর দূরান্ত থেকে মল্লিকার মহিমায় ছুটে আসেন অনেকেই। পুজো দেন। পায়রা ওড়ান। মূর্তির পূজক গোবিন্দ উত্থাসিনী জানালেন, অন্ত:সত্ত্বা মেয়ে বাবার সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন। জল তেষ্টা পেলে কেলেঘাইয়ে নেমে হারিয়ে যান। পরে বাবা স্বপ্নাদিষ্ট হন। সেই থেকে সেতুর গায়ে বাবার সঙ্গে ফেরা মেয়ে ‘মল্লিকা’র’ মূর্তি বসানো হয়। লোকবিশ্বাস, সেতুর নীচ দিয়ে গলে মল্লিকার পুজো দিলে নিঃসন্তান মহিলার সন্তান হয়। দৈবী সংস্কৃতির পরম্পরা রক্ষা পেয়ে গিয়েছে। শুধু হারিয়েছে প্রাচীন সেতুর ঐতিহ্য। এখনকার কংক্রিটের পোলের নীচ দিয়ে জল বয়ে যাচ্ছে নদের। দিন দিন মানুষের ও প্রকৃতির কর্মকাণ্ডে মজে যাচ্ছে নদ। তেমন ভাবেই ইতিহাসেও জং ধরছে। এ ইতিহাস হয়ত কম লোকেই জানেন। সংস্কার যাই থাক ইতিহাস প্রাচীনতার কথাকেই সামনে আনে।
।। সমীক্ষার পটভূমি- কেলেঘাইর উৎস সন্ধানে ।।
কৃ ষ্ণ গো পা ল চ ক্র ব র্তী
মনে পড়ে কি! মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই নদের চাঁদের নদী প্রেমের কথা। পড়লেই বা কি করতে পারি আমরা! ওর মতো তো আধুনিক যন্ত্র সভ্যতার চাকায় পিষে মরতে পারিনা। ও এটাই ভাবছেন; নদীর কষ্ট দুঃখের কথাই তো নদের চাঁদ ভেবেছিলো, তাকে তো নদী তার বুকে টেনে বাঁচাতে পারেনি। আসলে সাহিত্যিকের ভাবনাটা ছিল এমনই যে প্রকৃতি ও আধুনিক সভ্যতা একে অপরের হাত ধরে চলবে অর্থাৎ ব্যালেন্সিংটা জরুরি। আর আমরা নদীর থেকে যখন যেমনটা চাইবো, তখন তেমনটা না পেলেই আমাদের সঙ্গে সংঘাতটা জোরদার হবে, এটাই কি স্বাভাবিক? আমাদের প্রয়োজনে আমরা তার শরীরে আঘাত, অত্যাচার, শোষণ সবকিছুই মাত্রাতিরিক্ত করবো, তবুও আমাদের দিতেই হবে। কিন্তু আমরা কখনো ভেবে দেখিনি নদীটা কেমন আছে? তার যন্ত্রনার কথা আমরা কখনো কান পেতে শুনতেই চাই না। শুধু চাওয়া পাওয়ার অঙ্কটা কষতে থাকি দিবারাত্রি। আর নদী শরীর ও তার জীবনের কথা ভাবিনি বলেই নদী আমাদের নিয়ে তার ভাবাটা বন্ধ করতে বসেছে। আসলে সভ্যতার আধুনিকীকরণের নামে যে চাকাটা আমরা সামনের দিকে গড়াচ্ছি, তাতে নদী প্রতিনিয়ত বিদ্রোহ ঘোষণা করছে, আগামীতে তার মাত্রা আরও বাড়বে বই কমবে না। তাই নদীর ভালো-মন্দের কথা বেশি করে ভাবতে হবে আমাদের। তবেই ভরন পোষণের কথা ভাববে নদী, যেমনটা ভেবে এসেছে এত কাল। ঠিক এই জটিল সময়ে দাঁড়িয়ে আমরা কয়েকজন “…ও_কেলেঘাই” ওয়েব জার্নালের পক্ষ থেকে আমাদের প্রাণের নদী কেলেঘাইর উৎস মুখ দর্শন, তার গতিপথ এবং সেই সঙ্গে হাজার হাজার বছর ধরে নদীর দুপ্রান্তে বসবাসকারী মানুষের জন্য নদীর দান কতোটা, তার খোঁজ শুরু করেছি। ধারাবাহিকভাবে আমরা চালাবো এই সমীক্ষা সংগ্রহের কাজ। যারা নদী ভালবাসেন- কেলেঘাইকে ভালবাসেন আমাদের এই প্রয়াসের সঙ্গী হতে পারেন।
0 Comments