Script:

বাংলার আবহমান নদী সমৃদ্ধ করেছে প্রাচীন সাহিত্য থেকে শুরু করে সমসাময়িক সাহিত্যের বহুমুখী ধারা ছড়া, কবিতা, গান, গল্প, নাটক ও উপন্যাসকে। রবীন্দ্র ভাবনায় নদী মানসকন্যাপ্রতিম। শুধু রবি ঠাকুর নয় বাঙালি  সাহিত্যিকদের নামের তালিকা  এক্ষেত্রে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর।জীবনের চতুরাশ্রমে নদী থাকে সব অধ্যায়ে । জনজাতির উদ্ভব ও বিকাশে নদীর ভূমিকা সীমাহীন। এমনই একটি নদীর নাম ‘কেলেঘাই’। ঝাড়গ্রাম জেলার দুধকুন্ডির কাছে একটি প্রত্যন্ত গ্রাম ‘বামনীগ্রাম। এই গ্রামের প্রাকৃতিক লাবন্যের ঔরসে তার জন্ম। খুব নীরবে কঠিন শৈশব কাটিয়ে, কৈশোরে পেয়েছে সাঁকরাইল, নারায়ণগড়, সবঙ্গ আর পটাশপুরের সমৃদ্ধ জনপদ। আর বাকি পথ জুড়ে তার যৌবনের জলতরঙ্গ। যে যৌবনে বাগুই ও কপালেশ্বরী  প্রেম জুগিয়েছে তার দুই প্রকোষ্ঠে। কাঁসাই নদীর সাথে মিলিত হয়ে হলদি নাম নিয়ে হুগলী নদীর মোহনায় নিজেকে মিলিয়েছে সাগরে । এ  এক জীবন্ত নদী। বিচিত্র তার জৈবনিক বিকাশ। সব নদীর মত অঙ্কে ধারন করেছে বিশাল জনজাতি,শস্যখেত, জলাভূমি, খাল ও বিল। সব ধরনের বৈচিত্র্যতে প্রকট এই নদী। দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য নদীগুলিকে ঈর্ষান্বিত করেছে প্রাচীনকাল থেকে । ইতিহাস থেকে প্রাগৈতিহাসিক, পরাধীনতা থেকে স্বাধীনতায়, সমাজ থেকে সামাজিক, জীবন থেকে জীবিকায় এই নদীর প্রেক্ষাপট ভীষণ সমৃদ্ধ। তবু অভিমান আছে। আছে  বেদনা। শিল্পীর শিল্পকর্মে এ নদী প্রায় অচ্ছুত। সবকিছু থেকেও এ নদীর নাম নেই তথাকথিত আধুনিক সাহিত্যে, কাব্যে। অবশ্যই লোকসংস্কৃতির আবহমান ভাণ্ডারে তার মর্যাদা রয়েছে।  এই অভিমানের তীরে দাঁড়িয়ে “…ও কেলেঘাই” এর সৃজন সম্ভাবনা। শিল্পীর ভাবনায়, শিল্পের প্রয়োজনে, জীবন-জীবিকায় ও সাহিত্যে “কেলেঘাই” এর নাব্যতা ফিরে পেতে এ এক উন্মুক্ত উপকূল। 

Contact:

ড. মৃন্ময় মণ্ডল (Editor)

পটাশপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, ৭২১৪৫৪
ইমেল: o.keleghai@gmail.com
দূরভাষ: +91 96417 83534